যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে তাদের কাছে সারাদিনের
সময়টা খুব অল্পই মনে হয়। কারণ আমাদের হাতে এত পরিমাণ কাজ থাকে যে সারাদিন কোন দিক
দিয়ে চলে যায় টেরই পাওয়া যায় না। তবে আপনি যে প্রতিষ্ঠানে যেই লেভেলের কর্মী
হিসেবেই কাজ করেননা কেন যদি আপনার কাজ গোছানো না হয় তাহলে দিন শেষে দেখবেন যে
আপনার অনেক কাজই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। সে সকল কাজের মধ্যে হয়তো এরকম কোন কাজও
থাকতে পারে যা শেষ না করে বের হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ফলে বাধ্য হয়েই সে
কাজটি আপনাকে করে যেতে হয়। ফলশ্রুতিতে আপনি নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থল থেকে বের হতে
পারেন না। এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকলে আপনার কাজের প্রতি এক ধরণের বিতৃষ্ণা
তৈরি হয় যার প্রভাব আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়ে।
তবে আপনার কাজ যদি সাজানো গোছান হয়, তাহলে সঠিক সময়ে যমন
আপনার কাজ আপনি শেষ করতে পারবেন, তেমনি কাজের গুণগত মাণও থাকবে ভাল। ফলে কোম্পানি
যেমন উপকৃত হবে তেমনি আপনিও কাজকে সহজ করে
ব্যক্তিগত জীবনকে উপভোগ করতে পারবেন। এই সব কিছুর জন্য দরকার আপনার কিছু Organizational Skills যা আপনার কাজকে সাজিয়ে ও গোছিয়ে সহজ করে
তুলবে। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
কাজের তালিকা তৈরি করুন ও গুরুত্ব অনুযায়ী সাজান
১। প্রতিদিন অফিসে প্রবশের পর সারাদিন কি কি কাজ করতে হবে তার একটি সম্ভব্য তালিকা
তৈরি করে নিন।
২। তালিকা করার পর কাজের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীতা অনুযায়ী সাজান। অর্থাৎ, যে কাজগুলো
আগে করতে হবে সেগুলোকে তালিকার উপরের দিকে রাখুন।
৩। প্রত্যেকটি কাজের জন্য সম্ভব্য সময় নির্ধারণ করুন এবং কাজ শুরু করে দিন।
৪। যে কাজটি শুরু করবেন অবশ্যই সেটি একই সাথে শেষ করার মানসিকতা নিয়ে শুরু করুন।
[মনে করুন, কোন একটি সমস্যা নিয়ে
আপনি কোন উচ্চপদস্থ স্যার এর সাথে দেখা করবেন। হয়তো আপনি আপনার ডেস্ক থেকে সেই উদ্দেশ্যে বের হয়ে
স্যারের রুমের সামনে গিয়ে দেখলেন সে উনি কারো সাথে কথা বলছে বা কোন কিছু নিয়ে
ব্যাস্ত আছেন। আপনি তা দেখে যদি সরাসরি চলে আসেন এই ভেবে যে স্যার ব্যস্ত আছেন পরে
এক সময় আসব তাহলে আপনার সমস্যাটি সমাধান করতে অনেক সময় লাগবে। এক্ষেত্রে আপনি
স্যারের রুমের না ঢুকলেও বাইরে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন বা নির্দিষ্ট
প্রসিডিউর মেনে স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। এতে স্যার আপনাকে তখন সময় না
দিলেও পরে কখন সময় দিবে তা অন্তত বলে দিবে। এতে আপনার কাজটি ৫০% এগিয়ে যাবে।]
Proactive হোন
হাতে সময় বের করে সামনের কাজগুলো এগিয়ে রাখার নামই Proactive হওয়া। এতে কোন সমস্যা হলেও কাজ এগিয়ে থাকার কারণে সমস্যাটি সমাধান করে নির্দিষ্ট
সময়ে কাজটি শেষ করে ফেলা যায়।
Analytical হোন
কোন একটি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে কাজের
অনেক অনাগত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ও সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
গুছিয়ে কাজ করুন
কাজের লিস্টগুলো অবশ্যই একটি ডায়েরিতে করুন যাতে কয়েকদিন আগের লিস্টও থেকে যায়।
কারণ কিছু কাজ থাকবে যা কয়েকদিন ধরেও চলতে পারে। অনেকে লিস্ট করার জন্য টুকরো কাগজ
ব্যবহার করে যা কখনোই ঠিক না। কারণ এতে কাজের সৌন্দর্য যেমন নষ্ট হয় তেমনি হারিয়ে
যাওয়াও সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া চাকরী ক্ষেত্রে আমাদের সবকিছুতেই Professionalism
রক্ষা করে চলা উচিত যা আমাদেরকে একজন আদর্শ কর্মী হসেবে গড়ে তুলতে
সাহায্য করবে।
সময়ের সঠিক ব্যবহার করুন
আমাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ে সঠিকভাবে কাজ শেষ করে কর্মস্থল পরিত্যাগ করতে হলে সর্বদা
সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। আমরা অনেকেই সকালবেলা কাজ করি কম গতিতে যার পূর্ণ
গতি আসে দুপুরের পর । বিশেষ করে বিকালে। এরকম না করে আমরা যদি সকাল বেলা থেকেই
সমান গতিতে কাজ করি তা হলে সারাদিনের কাজের লোড সমানভাবে ভাগ হয়ে নির্দিষ্ট সময়ে
কাজ শেষ হয়ে যাবে।
Computer ব্যবহারে
পারদর্শী হোন
অফিসিয়াল কাজে অবশ্যই Data সম্পর্কিত কাজ থাকে। কিছু
কিছু কাজ থাকে যা Manually করতে গেলে সময় যেমন বেশি লাগে
তেমনি ভুল হওয়ারও সম্ভবনা থাকে। তাই কোন Data সম্পর্কিত কোন
কাজকে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সম্পাদনের জন্য MS Excel হচ্ছে
চমৎকার একটি Tool. তাছাড়া MS office, Powerpoint ইত্যাদি সম্পর্কে দক্ষতা থাকলে সব ধরণের কাজের ক্ষেত্রে অনেক Support
পাওয়া যায়। তাই এই Application গুলো শিখে নিতে
হবে।
সর্বোপরি
কথা একটাই, আপনি কাজের মত করে চলবেননা, কাজকে আপনার মত করে চালান।
No comments:
Post a Comment